ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমায় দোল উৎসব পালিত হয়। চলতি বছর ৭ মার্চ দোল। আবার হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী চৈত্র মাসের প্রতিপদ তিথি হোলি। সেই অনুযায়ী চলতি বছর ৮ মার্চ হোলি পালিত হবে। জ্যোতিষ শাস্ত্রে দোল ও হোলির সঙ্গে জড়িত কিছু বিশেষ উপায়ের উল্লেখ পাওয়া যায়। দোলের আগে এই উপায়গুলি করলে লক্ষ্মীর আশীর্বাদ পেতে পারেন। এ ক্ষেত্রে বাস্তু শাস্ত্রের পরামর্শ অনুযায়ী দোলের আগে কিছু জিনিষ বাড়ি আনার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। দোলের আগে কোন কোন জিনিস বাড়ি আনবেন, উন্নতি ও সমৃদ্ধির আগমন ঘটবে, জেনে নেওয়া যাক। সৌভাগ্য ও উন্নতির জন্য এই টিপস গুলো মেনে চলুন।
1.*রাধা কৃষ্ণের সঙ্গে শুরু করুন হোলি উৎসব*
রাধা-কৃষ্ণের আরাধনা এবং ভগবানের সঙ্গে নাচ-গান করে হোলি উৎসব অসম্পূর্ণ। ভারতের অধিকাংশ পরিবারই তাঁদের পরিবারের ভগবানের মূর্তিকে টেবিলে সাজিয়ে রেখে, প্রথম রং ও মিষ্টি তাঁদেরকে উৎসর্গ করে। এটা উৎসবের সঙ্গে সঙ্গে পরিবার ও বাড়ির সমৃদ্ধি বাড়ায়। তাই রং খেলার আগে প্রথমে ভগবানের পায়ে রং দিয়ে তারপর শুরু করুন হোলি খেলা।
*2. বাড়ির প্রবেশদ্বারে গাছ লাগান*
এই হোলিতে বাড়ির সুখ-সমৃদ্ধি বৃদ্ধি করতে বাড়ির প্রধান প্রবেশ মুখে গাছ লাগাতে পারেন। প্রচুর রঙিন গাছ রয়েছে যা হোলির রঙের সঙ্গে মিশে আপনার জীবনকে আরও রঙিন করে তুলবে। বাস্তু অনুসারে, পূর্বে সবুজ গাছপালা লাগানো যে কোনও সম্পর্ক বজায় রাখার জন্যও ভাল।
*3. বাড়ির প্রবেশ দ্বারে নিজের নামকে সাজিয়ে তুলুন*
প্রবেশ দ্বার বা দরজার উপর আপনার নাম খোদাই করা কেবল সম্পত্তির মালিকানাকে জোরদার করে না, তবে ঘরের মধ্যে ইতিবাচকতা এবং সৌভাগ্য অর্জন করতে সহায়তা করে। এছাড়াও হোলির সময় আপনার বন্ধুরা সহজেই আপনার বাড়িও খুঁজে পাবে। বাড়ির প্রবেশদ্বার পরিস্কার এবং ফুল দিয়ে সাজিয়ে নিন আপনার নেমপ্লেটটিকে।
*4. সুখের জন্য গোলাপি রং ব্যবহার করুন*
গোলাপি রংটিকে সবচেয়ে স্নিগ্ধ ও মন ও হৃদয়ের জন্য উপযোগী হিসাবে ধরে বিশেষজ্ঞরা। তাই এই রঙের আসবাব পত্র সহজেই বাড়িতে রাখা যায়, কারণ তাতে অতিথিরা হোলির সময় রঙিন পোশাকে বসলেও তা সহজে ময়লা হয়ে যাবে না।
*5.গণেশের পুজো*
হোলি উৎসবের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল অথিথিদের ঠাণ্ডা দুধে ড্রাই ফ্রুট ও মিষ্টি মিশিয়ে খেতে দেওয়া। তবে বাস্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের পানীয় অতিথিদের আগে ভগবান গণেশকে দেওয়া দরকার, তাতে সমৃদ্ধি বাড়ে। সুন্দর গণেশের মূর্তি বাড়ির বসার ঘরে রেখে প্রথমে ঠাণ্ডা পানীয় ভগবানকে দেওয়ার পর সমস্ত অতিথিরা একে অপরের সঙ্গে ভাগ করে খেতে পারেন।
*6. সুইমিং পুল*
বাড়ির আঙিনায় ছোট সুইমিং পুল বা জলের কোনও জায়গা থাকা বাস্তুমতে শান্তি ও সম্প্রতি বজায় রাখে বাড়ির। যদি আপনার বাড়িতে তা না থাকে তবে এটাই সুবর্ণ সময় অল্প খরচে কোনও জলের জায়গা বা পুল তৈরি করে নিন। যাতে হোলির সময় সেই পুলটি কাজে লাগতে পারেন।
*7. বাড়িতে নিয়ে আসুন উদীয়মান সূর্যকে*
হোলির সময় যদি বাড়িটা একটু সাজাতে চান তবে বাড়িতে নিয়ে আসুন একটি উদীয়মান সূর্য। যা বাড়ির পূর্বদিকে টাঙানো থাকবে। এতে স্বাস্থ্যকর হবে সামাজিক সম্পর্ক এবং আপনার মধ্যে ইতিবাচক অনুভূতি জাগিয়ে তুলবে।
*8. উইন্ড চিমস*
বস্তুগুলি ফেংশুই এবং বাস্তু উভয় ক্ষেত্রেই সৌভাগ্যের আশ্রয়কারী হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। সুতরাং আপনি যদি এই হোলিতে আপনার বাড়ির জন্য কোনও ব্যয়বহুল সজ্জা সন্ধান করছেন তবে শৈল্পিক উন্ড চিমগুলি চেষ্টা করুন নিয়ে আসার যা ঘরকে সুরেলা আওয়াজ দিয়ে পূর্ণ করবে এবং সাদৃশ্য বজায় রাখবে।
*9. রঙ্গোলি*
যে কোনও শুভ উৎসবে রঙ্গোলি দেওয়া খুব ভালো বলেই মনে করা হয়। হোলির দিনও তা করা যেতেই পারে। উজ্জ্বল বর্ণের লাল, কমলা, সবুজ, নীল, হলুদ সহ নানা রং দিয়ে বাড়ির সামনে সুন্দর করে রঙ্গোলি আঁকতে পারেন। এতে বাড়িতে খুশি ও সমৃদ্ধি বাড়বে এবং অতিথিদের স্বাগত জানানোর জন্য একেবারে আদর্শ।
*10. জুতোর তাক*
বাস্তু শাস্ত্র অনুযায়ী জুতোর তাক কখনই দরজার বাঁপাশে হওয়া উচিত নয়, ডানদিকে জুতোর তাক সবসময় সৌভাগ্য নিয়ে আসে। হোলির সময় বাড়ির দরজা খোলাই রাখুন এবং অতিথিদের বলুন জুতো, ছাতা সব বাইরে রাখতে।
এই কাজ গুলি পালন করুন হোলির আগে, জীবন সুন্দর করতে।
১. অনেকবার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও জীবনে সাফল্য লাভ করা যায় না। এর পিছনে বাস্তু দোষ একটি কারণ হতে পারে। বাস্তু দোষ কাটিয়ে ওঠার জন্য দোলের আগে একটি সুন্দর তোরণ আনুন ও বাড়ির প্রবেশদ্বারে লাগান। এর প্রভাবে বাস্তু দোষ কাটিয়ে ওঠা যায়।
২. বাড়ির উত্তর বা উত্তর-পূর্ব দিকে একটি অ্যাকোয়েরিয়াম রাখুন। এই দিকটিকে কুবেরের স্থান মনে করা হয়। এর ফলে পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধির বৃদ্ধি হবে। দোলের আগে অ্যাকোয়েরিয়াম বাড়ি এনে রাখলে অর্থ আগমনের পথ সুগম হবে।
৩. জ্যোতিষ এবং বাস্তু পরামর্শ মেনে দোলের আগে বাড়িতে বাঁশ গাছ লাগান। বাঁশ গাছ সৌভাগ্য বৃদ্ধি করে। এই গাছটি নেতিবাচক শক্তি দূর করে এবং পরিবারের সদস্যদের সুস্থ রাখে।
৪. বাড়িতে ক্রিস্টালের কচ্ছপ রাখাও অত্যন্ত শুভ। বাড়িতে কচ্ছপ রাখলে আর্থিক উন্নতি হয়। এর ফলে অঢেল ধন-সম্পত্তি লাভ করা যায়। পরিবারে ইতিবাচক শক্তির আগমন ঘটায় কচ্ছপ। ক্রিস্টাল ছাড়াও ধাতু বা স্ফটিকের কচ্ছপও এনে রাখতে পারেন। কচ্ছপের পিঠে কুবের যন্ত্র আঁকা থাকলে, তা আরও শুভ।
৫. বাড়িতে ড্রাগনের মূর্তি বা ছবি রাখাও শুভ। মনে করা হয়, এর ফলে পরিবারের সদস্যরা নিরাপদ থাকেন। বাড়িতে ড্রাগনের ছবি লাগালে পরিবারের সদস্যরা কুনজর থেকে সুরক্ষিত থাকতে পারে। পাশাপাশি পরিবারে লক্ষ্মীর বাস হয়।
৬. দোলের আগে বাড়িতে চিনা কয়েন অবশ্যই আনুন। ফেঙ্গ শুই অনুযায়ী লাল সুতোয় বাঁধা চিনা কয়েন প্রবেশদ্বারের হ্যান্ডেলে ঝোলালে পরিবারে সুখ-শান্তির আগমন হয়।