সাঁইবাড়ি হত্যাকান্ডের স্মৃতিতে কেঁদে ফেললেন কংগ্রেস নেতা তরুণ রায় ।
নিজস্ব প্রতিনিধি,দুর্গাপুর- প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে এসে সাঁইবাড়ি হত্যাকান্ডের স্মৃতিতে কেঁদে ফেললেন কংগ্রেস নেতা তরুণ রায়। বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী ডঃ সুকৃতি ঘোষালের সমর্থনে ভোট প্রচারে এসে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন পশ্চিম বর্ধমান জেলা কংগ্রেসের প্রাক্তন এই জেলা সভাপতি।রবিবার ডঃ ঘোষালের সমর্থনে একটি জলসত্রের আয়োজন করা হয় দুর্গাপুরের রঘুনাথপুর এলাকায়।সেই সভাতেই কথা প্রসঙ্গে তরুণ বাবু তাঁর রাজনৈতিক জীবনের নানা ওঠাপড়ার টুকরো মুহূর্তের স্মৃতিচারণ করেন। একসময় তাঁর বক্তৃতায় বামেদের সাড়ে তিন দশকের অসংখ্য গণহত্যার কথা চলে আসে। চলে আসে কিভাবে সিপিএম আশ্রিত সন্ত্রাসীদের হাতে নৃশংস ভাবে খুন হয়েছেন অসংখ্য কংগ্রেস নেতা কর্মী সে প্রসঙ্গও। বক্তৃতার শুরুতে তরুণ বাবু কিছুটা সমালোচনার ঢংয়ে বলেন সুদীর্ঘ বাম আমলে ঘটে যাওয়া মরিচঝাঁপির উদ্বাস্তুদের উপর নৃশংস হত্যাকান্ডের রোমহর্ষক বর্ণনা, একই সঙ্গে পরবর্তী কালে কলকাতার বিজন সেতুতে ১৭ জন আনন্দমার্গী সাধুকে জীবন্ত দগ্ধ করে খুন করার ঘটনা, ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই কলকতার শহীদ মিনারে পুলিশের গুলিতে ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মীর নিহত হবার ঘটনা, স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বারবার তাঁর সতীর্থ কংগ্রেসী ভাই বন্ধুদের অকালে সিপিএম আশ্রিত সমাজবিরোধীদের হাতে নিহত হবার হৃদয় মোচড়ানো ঘটনাগুলির কথা ঘুরে ফিরে আসে।নন্দিগ্রাম, নেতাইয়ের গণহত্যার পাশাপাশি তরুণ বাবু বর্ধমানের কুখ্যাত সাঁইবাড়ির গণহত্যার কথা তুলে ধরেন।কিভাবে সিপিএম এর পাষন্ড জল্লাদ বাহিনী সদ্য খুন হওয়া পুত্রের রক্তমাখানো ভাত তাঁদের মাকে খেতে বাধ্য করেছিল, সেই বর্ণনা দিতে গিয়ে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি তরুণ বাবু। বারবার তাঁকে রুমাল দিয়ে তাঁর অশ্রুসজল চোখ দুখানি মুছতে দেখা যায়।তিনি বলেন,একজন হতভাগ্য মাকে তাঁর সন্তানের রক্তমাখা ভাত যারা খেতে দিতে পারে তাদেরই উত্তরসূরিদের হয়ে ভোট চাইতে আজ কংগ্রেসকে পথে নামতে হচ্ছে! তিনি বলেন, আজও ভুলতে পারিনি দুর্গাপুরের প্রতিশ্রুতিমান কংগ্রেস নেতা আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বদেশ মিত্র, সেবা বাউড়িদের নৃশংস ভাবে হত্যার সেই হাড়হিম করা ঘটনাগুলি। তাঁর কথায় উঠে আসে, আজ অদৃষ্টের কী নিষ্ঠুর পরিহাস, সেই ঘাতক সিপিএম এরই প্রার্থীদের জন্য কংগ্রেস নেতা কর্মীদের ভোট প্রচারে নামতে হচ্ছে। রাজনীতির এই বৈচিত্রময় বাঁকে এসে দাঁড়িয়েও আজ বুকে পাথর বাঁধতে হচ্ছে রাজ্যের লক্ষ লক্ষ কংগ্রেস কর্মীদের।রাজনীতির এই বাধ্যবাধকতার তীব্র সমালোচনাও শোনা যায় দীর্ঘ প্রায় সাড়ে চার দশক কংগ্রেস রাজনীতির বৃত্তে থাকা এই নেতার কন্ঠে। এদিনের জলসত্র মঞ্চে মহকুমার বিভিন্ন কংগ্রেস নেতাকর্মীদের পাশাপাশি কংগ্রেস সেবাদলের চেয়ারম্যান অমল হালদার, কংগ্রেস নেতা পূর্ণেন্দু পন্ডা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।